সম্ভবত টেস্ট ক্রিকেটের ব্যাটিংটা আরও একবার শুরু থেকে শুরু করতে চাইবেন বাংলাদেশের কোচ ফিল সিমন্স বা সালাউদ্দিন। সম্ভবত টেস্টে কীভাবে ব্যাট করতে হয়, সেই পাঠটাই ভুলে গিয়েছেন জাতীয় দলে থাকা ক্রিকেটাররা। জাতীয় দল মানে, দেশের সেরা ১১ ক্রিকেটারের মিলনমেলা। দূর্ভাগ্যবশত, সেই সেরা ১১ জনের মাঝেই এখন ক্রিকেটীয় বোধের চরম অভাব।
বাংলাদেশকে কেন টেস্ট ব্যাটিং নতুন করে শেখানোর আলাপ উঠেছে, সেটা আগে ব্যাখ্যা করে দেখা যাক। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিলেট টেস্টে চতুর্থ দিনের ব্যাটিং বাংলাদেশ শুরু করেছিল ৬ উইকেট হাতে নিয়ে। তখন পর্যন্ত লিড ছিল ১১২ রানের। কিন্তু, চতুর্থ দিনে বাংলাদেশ ৬ উইকেট হারিয়ে তুলেছিল মোটে ৭১ রান। নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, মেহেদি হাসান মিরাজদের মতো অভিজ্ঞরাও করেছেন হতাশ।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২য় ইনিংসে বাংলাদেশ ২৫০ পার করেছিল জাকের আলী অনিকের ৫৮ রানের ইনিংসে ভর করে। শেষ ১৪ টেস্ট ইনিংসের মাঝে এটি মাত্র তৃতীয়বার বাংলাদেশের আড়াইশ পেরুনো স্কোর।
পাকিস্তানের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডিতে দুই ম্যাচের সিরিজেও দেখা গিয়েছিল ভয়াবহ বিপর্যয়। দ্বিতীয় ম্যাচে ২৬ রানে ৬ উইকেট পর্যন্ত হারিয়েছিল টাইগার ব্যাটিং লাইনআপ। সেবারে লিটন কুমার দাস এবং মেহেদি মিরাজে রক্ষা পায় বাংলাদেশ। তবে, ওই সিরিজটা জয়ের পরেই যেন পারফরম্যান্সের গ্রাফিটা নিজের হাতে নিচের দিকে টেনে নামিয়েছে টাইগার ক্রিকেট।
ভারতের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে একবারও আড়াইশ পেরুতে পারেনি বাংলাদেশ। সর্বোচ্চ গিয়েছে ২৩৪ পর্যন্ত। ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৩০৭ করেছিল বাংলাদেশ। পাকিস্তান সিরিজের পর থেকে ৭ টেস্টে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। ওই সিরিজেই দ্বিতীয় টেস্টে ১৫৯ এবং ১৪৩ রানে অলআউট হয়ে ইনিংস ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ।
২০২৪ সালের শেষ সিরিজ হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে একবার ২৬৮ এবং একবার ২৬৯ করেছিল বাংলাদেশ। সেই সিরিজেও অবশ্য একবার ১৬৪ আর একবার ১৩২ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ।
সবমিলিয়ে শেষ ১৪ ইনিংসে বাংলাদেশ ২০০ এর নিচে আউট হয়েছে ৮ বার। ২৫০ এর বেশি স্কোর আছে ৩ বার। আর একবার মাত্র ৩০০ এর বেশি স্কোর ছিল টাইগারদের। এই সময়ের মাঝে বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে সেঞ্চুরি হয়েছে মোটে ১টি। ভারতের বিপক্ষে ১০৭ রানের ইনিংস ছিল মুমিনুল হকের।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারের পর এবার বাংলাদেশ কি রানের সংখ্যা আর গ্রাফ নিয়ে নিজেদের ভুল শোধরানোর কাজ করবে কি না, সেটাই বড় এক প্রশ্ন।
খুলনা গেজেট/এনএম